একেন বাবু, মানেই রহস্য, বুদ্ধি আর ঠোঁটকাটা রসবোধের এক অনন্য মিশেল। এবার সেই একেন বাবুর নতুন ছবির শুটিং হয়েছে কাশীর রাস্তায়, গঙ্গার ধারে, আর বাংলার গন্ধে ভরপুর অলিগলিতে। কিন্তু এই রোমাঞ্চের আবহে থেকে গেছে এক নিঃশব্দ অথচ হৃদয়স্পর্শী গল্প — এক বঙ্গসন্তানের, যার জীবনের আলো নিভে গেল ঠিক তখনই, যখন ক্যামেরার আলো চূড়ায়।
🎥 ক্যামেরার সামনে একেন বাবু, আর পেছনে?
ছবির ইউনিট, অভিনেতা-অভিনেত্রী, কলাকুশলীরা শুটিংয়ের ফাঁকে খুঁজে পেলেন এমন এক জায়গা — এক রেস্টুরেন্ট, যার নাম “বর্ণালী রেস্টুরেন্ট”। সেখানে খেয়ে তারা যেন ফিরে পেলেন মায়ের রান্নার স্বাদ।
অভিনেতা বিশ্বনাথ — ছবির এক মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করা শিল্পী — তৃপ্তির সঙ্গে বললেন:
> “এই বাঙালি খাবার পেয়ে তো আমার এই সফরটাই বেঁচে গেল!”
খুশি হয়ে তিনি রেস্টুরেন্টের কর্ণধার-এর সঙ্গে একটি ছবি তোলেন — যা আজ এই লেখার স্মৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে।
💔 কিন্তু সেই কর্ণধার আজ আর নেই…
ঠিক যখন ছবির প্রোমোশন নিয়ে ব্যস্ত ফিল্মের টিম, তখনই কাশীর মানুষ এক কঠিন যুদ্ধ লড়ছিলেন — বাঁচানোর যুদ্ধ, আশার যুদ্ধ। কিন্তু সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে জীবন থেমে গেল।
এই মানুষটি, কাশীর বাঙালি টোলার সোনারপুরা অঞ্চলের বাসিন্দা, একসময় শরীরচর্চার জগতে প্রশংসিত ছিলেন। পরে স্ত্রীকে নিয়ে গড়ে তোলেন কাশীর গর্ব “বর্ণালী রেস্টুরেন্ট”। এটি শুধু খাওয়ার জায়গা ছিল না, ছিল এক আবেগের কেন্দ্র।
🍛 ‘বর্ণালী’ ছিল শুধু রেস্টুরেন্ট নয়, এক ঘরের স্বাদ
ডাল-ভাত, মাছের ঝোল, শুকনো ভাজা — এমন স্বাদ যা বহিরাগত বাঙালিদের মনে করিয়ে দিত বাড়ির দুপুরবেলা। বহু ছাত্র, পর্যটক, চাকরিজীবী এই জায়গাকে বানিয়ে নিয়েছিলেন নিজের নির্ভরতার ঠিকানা।
📸 স্মৃতির ফ্রেমে বিশ্বনাথ ও এক সাহসী মানুষ
বিশ্বনাথ ও কর্ণধার সেলফিতে যিনি হাসছেন — হয়তো কেউ জানতেন না সেই হাসির আড়ালে লুকানো আছে দীর্ঘদিনের সংগ্রাম, পরিশ্রম, আত্মনিবেদন।
আজ সেই ছবি রয়ে গেছে স্মৃতি হয়ে, ঠিক যেমন বর্ণালী রেস্টুরেন্ট রয়ে গেছে কাশীর মানুষদের হৃদয়ে।
🙏 বিদায়, কাশীর সেই নিঃশব্দ নায়ক
তিনি ছিলেন না কোনো তারকা, না কোনো পরিচিত নাম — তবুও কাশীর বুকে, বহু ক্ষুধার্ত হৃদয়ে তিনি ছিলেন স্নেহ ও স্বাদের এক শান্ত মুখ।
তিনি ছিলেন —
👉 অসহ্য গরমে রেস্তোরাঁর জানালায় দাঁড়ানো এক শান্ত মানুষ,
👉 অভিনেতার পাশে আত্মবিশ্বাসী হাসিমুখ,
👉 সাধারণ জীবনের অসাধারণ প্রতীক।
📌 আজ যখন একেন বাবুর রহস্যে মাতোয়ারা দর্শকরা, তখন কাশী স্মরণ করছে সেই মানুষটিকে, যিনি জীবনের সবচেয়ে সহজ স্বাদটি দিতেন অসংখ্য মানুষকে — ভালোবাসা দিয়ে রান্না করা খাবার।
🙏 তাঁর নাম — সুশান্ত ভট্টাচার্য
কাশীর বাঙালি সমাজ ও বর্ণালী রেস্টুরেন্ট তাঁকে চিরকাল মনে রাখবে।