চারিদিকে গাঢ় অন্ধকার। নিকিয়ে নিচ্ছে জীবন, কি অপরিসীম আলোর অভ্যাস আমাকে প্রতিনিয়ত কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে চাবুক কষাচ্ছে! আমি আঘাতে আঘাতে জর্জরিত হয়ে তোমার প্রেমে মুষড়ে পড়ছি। ভালোবাসা একমাত্র আমার জীবনে কাঙ্ক্ষিত যা আমায় প্রতিদিনই বেঁচে থাকার শক্তি সঞ্চারিত করে। আমি পাপে পাপে বিদ্ধ হচ্ছি, বলতে পারছি না। তিলোত্তমার জন্য রাজপথে আমি আমার মত করে হাঁটতে পারবো তো?
যারা প্রতিদিন বাড়িতে একই কাজ করে, তাঁরা কেমন করে বিচার চায়? এই ভনিতা দেখে লজ্জিত হওয়া ছাড়া উপাই নেই।
কতোগুলো দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেল, কোনো জাস্টিস শোনা গেল না। পৃথিবীতে স্বীকার করার মত আনন্দ ও সুখ আর নেই! যীশুর কাছে নীরবে নিভৃতে যেমন আহুতি জানাতে হয় তেমন করে শুধু ভালোবাসার কাছে আমি নতজানু হই। তুমি যে আমার ঈশ্বরী। এই নাও নৈবেদ্য আর বেলপাতায় করে দিলাম বুকের রক্ত। তুমি আমায় মুক্ত করো।
এই যে শুধু খাওয়া আর দায়িত্বের জন্য নিজেকে ফুরিয়ে যাওয়া ছাড়া এও কি কম? আলো চিরদিন আমার ভালোলাগে না। অন্ধকার ভালোবাসি। তমসার বুক চিরে যে আলো পাই সেই তো আমার প্রেম। আমি বিয়ে করিনি, বিয়ে হয়তো করবো না। ভয় হয়তো শুধু, কে চায় বলো ধর্মবতারকে ঘরে আনতে? আমি তো তার কাছে বিচার চাইতে পারবো না। শুধু কাঠগড়ায়, পিছনে হাতদুটো রেখে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে! আমার পায়ে ভীষণ ব্যাথা করবে। আমি কষ্ট পাবো।
সেই ১৪ বছরের প্রেম, টগবগে শরীর, সেই প্রথম অর্গাজম আমি তো আর দ্বিতীয়বার পাবো না? আনন্দ বিহ্বল সেই চোখ! এখন তো প্রতিবন্ধকতা চূড়ান্ত। সাত পাঁচ ভেবে কাজ করতে হয়। শরীর তো রোগের ঝুড়ি। এই শরীর নিয়ে যাই কোথায়? এখনও নদীর কাছে বসি! আর বলি, তুমি কোথা হইতে আসিয়াছো? জানো আমার তো কেউ নেই, সকলই ভান।
এইভাবে বেঁচে থেকে কি লাভ? মরে গেলেই বা কি আর মহৎ কিছু হবে? সেই ভেবে এখনো টেনে চলেছি এই শরীর যা আমার ব্যাক্তিগত নয়। কিন্তু কথা শুনতে হয়। নাকি হরপ্পা মহেঞ্জোদারো, জামার চেয়ে গেঞ্জি বড়ো। যে যেমন করে পারো আমায় মারো, অপমান করো তাতে করে যদি একটু গ্লানি কাটে। ভালোবাসা তো অনেকটা মরিচীকার মত। জানি আছে কিন্তু কোনো অস্তিত্ব নেই। রোজ রাতে ঘুমিয়ে যাই ভাবি যদি জেগে উঠি আবার তাহলে আবার বইপাড়া যাবো। নাহলে ল্যাঠা চুকে বুকে যাবে। পরের জন্মে আবার আরও নিজেকে খুব যোগ্য করে তুলবো। এত দারিদ্র্য আমি নিতে পাচ্ছি না। আমাকে মহান করেনি। আমি সামান্য প্রাণ। তেমন কিছু করা হয়ে উঠলো না এই জীবনে, শুধু ফুরিয়ে যাওয়া ছাড়া। তাই আরও নিকষ অন্ধকারে হাঁটছি।