বন্য রাতের ঘুমহীন চুপকথারা

জঙ্গলের আগুন রঙা সবুজের ভেতর গোলাপী রঙের হিসহিস শব্দেরা, সারিবদ্ধ গাছেদের খয়েরী রোমকূপ বেয়ে চুপিসারে নেমে এসে, চারপাশ জুড়ে মহাকরুণার মত গাঢ় হয়ে চেপে বসা অন্ধকারটার মাঝে ভবিষ্যতের পথটুকু এঁকে দিয়েছে। যেন ঘুম ঘুম কুয়াশার চাদরের মায়াজাল ভেদ করে, বিভাজিকা স্তনের মত উল্টিয়ে পরে থাকা এই উপবাসী পার্বত্য উপত্যকা জুড়ে কেউ ছেড়ে দিয়েছে কয়েক হাজার হিলহিলে বিষাক্ত সাপ! সর্পিল এই রাস্তার কোন শুরু বা শেষ নেই! শুধু সন্ধ্যের বুক চিরে গলগল করে নামতে থাকা আবছায়া রঙের মনখারাপটা যে কোন পথচারীকে দিক ভ্রষ্ট করে দিতে পারে এই শাল পলাশ সেগুনের জঙ্গলে। এই বারো মাইল ফরেস্টে কাল বিকেলে ঢুকেছে লক্ষ্মীরাণী। উদ্ভ্রান্তের মত খড়কুটো সাঁতরে বেড়ানোর পর আজ দুপুরের ভেজা ভেজা রোদে জঙ্গলে একটা ময়ূর দেখেছে লক্ষ্মী। সেটার পিছু নিয়েছিল ও। কিন্তু পাহাড়ের খাদ বরাবর অতি দ্রুত ময়ূরটা চলে গেছে আরো গভীর জঙ্গলে। শুকনো পাতার ওপর দিয়ে পা টিপে টিপে গিয়েও ওটার নাগাল পায়নি লক্ষ্মী। ময়ূরটার ধীর, শান্ত, আলোময় শরীরটা বেয়ে শেষ বিকেলের কমলা রোদটা যেন সোনা হয়ে ঝরে গেছে, ওর ফেলে যাওয়া পথে। লক্ষ্মীর চোখে মায়া লাগে। ময়ূরটার পেছন পেছন জঙ্গলে ঢুকে এসে লক্ষ্মী সেই আওয়াজটা পায়! এই খসখসে শব্দটা বাপ-ঠাকুরদার আমল থেকে চেনে লক্ষী। সিরিশ কেউটের গায়ের ঘষা লেগে শুকনো পাতার গুটিয়ে মুড়িয়ে যাবার শব্দ! সাপটা ভয় পেয়ে পাতাবোনা প্রান্তরের আরো গভীরে ঢুকে যেতে চায়। লোভী চোখে সেদিকে একবার তাকায় লক্ষ্মী। তড়িৎ বেগে ধাবমান কালো কুচকুচে সাপের লেজটার দিকে চোখ পরে ওর! প্রায় পাথরের মত স্থির দৃষ্টিতে আলগা হাতে সাপের লেজটুকুকে ধরে টেনে বের করে নিয়ে আসে। অন্য হাতে সাপের বুকের কাছটা চেপে ধরে নিজের ঝোলায় রাখা চুবড়িতে ভরে ফেলে। সাপটা তখন বিশাল ফণা তুলে দাঁড়িয়ে পড়েছে লক্ষ্মীর হাতের কব্জিতে ভর দিয়ে। এই সাপের বিষ বাত-বেদনার অব্যর্থ ওষুধ। তাছাড়া এইসব জঙ্গলে আদিবাসী সমাজে যারা সাপের বিষের নেশা করে, তাদের কাছে এর বিষ বেঁচতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যায়। জঙ্গলের ভেতর দূর থেকে একটা জটিল অথচ ভারি অদ্ভুত আওয়াজ ভেসে আসে। যেন অবিকল বন মানুষের আওয়াজ! “আও, আও, আওও!” শব্দটাকে লক্ষ্য করে এগোতে থাকে লক্ষ্মী। অলৌকিক কোন প্রেম যেন তখন পেয়ে বসেছে দূরের আকাশমনি গাছের চাক ভাঙা মৌমাছিদের। একটু দূরেই একটা নালার ওপর একটা বাঁশের সেতু আর তার ওপর একটা ছেলে এক পায়ে দাঁড়িয়ে অনবরত মুখ থেকে আওয়াজটা বার করছে। দীর্ঘ্য একটানা বিচ্ছিরি রকমের আওয়াজটা মসৃণ মোলায়েম এই নির্জনতার পিঠে যেন সচেতন কোন কালের থেকে ছুটে এসে খোলা তীরের মত বিঁধছে! ছেলেটার বয়স বছর দশেক হবে মাথায় ঝুটির মত করে ময়ূরের পালক বেঁধেছে। হয়তো জঙ্গলে দেখা সেই ময়ূরটার পালক! বল্লমের খোঁচায় সেটার দেহ ফালাফালা করে আঁশ ছাড়াবার মত করে ছাড়িয়ে নিয়েছে পালকগুলো। ছেলেটা মাঝে মাঝে সাঁকোর গায়ের বাঁশের বেড়াকে পায়ে করে পেঁচিয়ে ধরে উল্টো হয়ে ঝুলছে। পায়ে পায়ে লক্ষ্মী ছেলেটার দিকে এগিয়ে যায়। ওর চোখে তখন ভারী হয়ে আসে গাঢ় মায়ার কুহক। যেন শত জাদুগরীর চেতনাবিহীন ইন্দ্রজাল উষ্ণ গান বুনেছে সেই চোখে! ছেলেটার দিকে কিছুক্ষন স্থির চোখে চেয়ে রইলো লক্ষ্মী। নিষ্পলক সে দৃষ্টি। জঙ্গলের উঁচু উঁচু গাছের মাথা ভেদ করে চরাচরে নেমে আসা সোহাগী আলোর সাথে যেন সর করেছে, বসন্তের হালকা হিম হিম ভাব। দূর থেকে ভেসে আসা অনামী পাখিটার ঠোঁটের শিসে হয়তো তখন বোনা হচ্ছে নিরাকার কোন জাদুমন্ত্র। লক্ষ্মীর নিখাদ নিটোল কাজল কালো চোখদুটো বেয়ে তখন ফিসফিস সংকেত শব্দেরা ছুঁয়োছুঁয়ি, লুকোচুরি খেলছে দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরে! ক্রমশঃ সম্মোহিত করে ফেলছে ছেলেটার অবুঝ বন্য চোখদুটোকে। ছেলেটা পেছন ফিরে তাকাল একবার তারপর জঙ্গলের ভেতর পাহাড় বেয়ে উপরের দিকে উঠে যেতে লাগলো। ছেলেটার পরনে শতছিন্ন একটা হাফপ্যান্ট, কোমর থেকে বেশ খানিকটা নেমে এসে নিতম্ব দেশ প্রায় পুরোটাই উন্মুক্ত। হাতে একটা কাস্তে। কাছেই কোন আধ বোজা ডিহিতে সে এসেছিল মোষ চড়াতে। লক্ষ্মীও ছেলেটার পেছন পেছন হাটতে লাগলো। ওর সন্ধানী চোখ খোঁজ পেয়েছে এই ঘন জঙ্গলে ওর পরবর্তী আস্তানার।

লক্ষ্মীর পুরো নাম লক্ষ্মী রানী মাহাত। বাড়ি পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের পায়ের কাছে, বামনী ডুঙরি নামের ছোট্ট একটা গ্রামে। ওরা কয়েক পুরুষ ধরে সাপ ধরে, সাপের খেলা দেখায়। সাপের বিষ তুলে ওষুধ তৈরী করে। ওর বাপ ঠাকুরদা জাঁতমঙ্গল পালা গাইত। জৈষ্ঠ্যের প্রখর তাপে ডিহির ঠিক মাঝখানে ডিঙিতে দাঁড়িয়ে ডান হাতে হাত তিনেক লম্বা পাহাড়ি কেউটে সাপকে, মন্ত্রমুগ্ধের মত দাঁড় করিয়ে রেখে ওর বাপ জনার্দন মাহাত যখন গাইত,

“জয় মা মনসাদেবী জয় বিষহরি।
অষ্টগো নাগের মাথায় পরম সুন্দরী।।
সাতালি পর্বতে যে এই নো আর বাসঘর।
তায় শুয়ে গো নিন্দা করে বেহুলা লখিন্দর।।”

লক্ষ্মী তখন হাঁ করে ওর বাপের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতো। সদ্য পূর্ণিমা থেকে সরে আসা বিহ্বল চাঁদের জরায়ু থেকে চলকে পড়া নীলচে জ্যোৎস্নায় মাথা ভিজিয়ে ওর বাপ ওকে জামশেদপুরের গল্প শোনাত। দলমা পাহাড় আর ডিমনা লেকের গল্প, কালিমাড়ির গল্প, দলমার শরীর থেকে নেমে এসে ডিমনায় জল খেতে আসা চিতল হরিণের গল্প। তারপর একদিন পরবের মেলায় এক হাট্টাগোট্টা মরদকে দেখল লক্ষ্মী। ওর বাপের সাথে হাসি মস্করা করছিল লোকটা। পরবের হাটে মাঝে মাঝেই টাটানগর থেকে লোকজন আসতো। তারপর হুট বলে একদিন জনার্দন ওর ছুড়ির বিয়ে ঠিক করে বসল সেই লোকটার সঙ্গে। হলুদবাণীর যোশীলাল ভাট্টি। যোশীলাল আদিবাসী নয় তবু প্রথম দেখাতেই লক্ষ্মীকে ওর মনে ধরে গেছিল। যদিও সেটা ভালোবাসা ছিল না, একেবারেই ছিল না সেটা অবশ্য লক্ষ্মী বুঝেছিল বিয়ের কয়েক মাস পর। হলুদবাণীতে যোশীলালের ভাটিখানা ছিল। সে ব্যবসা ছাড়া সেও সাপের বিষ বেঁচতো। ডিমনা হাটে বাঁধা খদ্দের ছিল তার। তাছাড়াও বর্ডার পার করেও বিষ চালান দিত এদিক ওদিক। লক্ষ্মীকে দিয়ে জাত সাপকে বশ মানিয়ে বিষ তোলাত। তাছাড়াও নিয়ম করে ওকে ভাটিখানায় বসাত যাতে খদ্দেরের কমতি না হয়। উঠতি বয়সের নধর শরীর লক্ষ্মীর। যৌবন উথলে উঠছে সুন্দরী সুবর্ণরেখার মত। সেরাতে একজোড়া কামাতুর চোখ ভাটিখানায় বসে আপাদমস্তক মাপছিল লক্ষ্মীর একঢাল চুল, শ্যামলী গালের আভা, স্ফীতকায় স্তনের বর্তুল। সারা শরীরময় মাতাল করা একটা অস্বস্তি নিয়েও চুপ করে ছিল লক্ষ্মী। লোকটা যোশীলালের খাস মেহমান, সেটা দিব্যি টের পেয়েছিল ও।

“তোহার মেহরারু কে ইয়াদ বা। কব্ মিল যাই?”

ভোজপুরী তেমন বোঝে না যোশীর আদরের ‘লছমী’। কিন্তু কথাগুলোর প্রেক্ষিতে ওর সাবধানী ইন্দ্রিয়ের পাঠানো বিপন্ন সময়ের শব্দ সংকেত সজাগ করে দিয়েছিল লক্ষ্মীকে। আর দেরী করেনি ও। সেদিন রাতেই যোশীর বিছানা থেকে উঠে গিয়ে, চুবড়ি থেকে ওর প্রাণাধিক প্রিয় সিরিশ কেউটেটাকে ঘরে ছেড়ে রেখে পালিয়ে এসেছিল হলুদবাণী থেকে। বান্দোয়ান হয়ে বাসে সোজা ধাসারা এসেছিল ও। নাহ বাড়ির দিকে আর পা বাড়ায়নি লক্ষ্মী। ও জানত ওর বাপ আর ওকে ঘরে নেবে না। জীবনের বিপরীত ঘূর্ণনে অজানা বাহকহীন এক পালকিতে চেপে বসে লক্ষ্মী। দোল খেতে খেতে পাড়ি জমায় অশোক-পলাশ-শিমুল-শালের জঙ্গল ঘেরা বিপদসংকুল অবিন্যস্ত দুনিয়ায়। এই জগৎটা লক্ষ্মীর অজানা হয়তো কিন্তু অচেনা নয়। ঝিকিমিকি তারার মাঝে উন্মুক্ত বনরাজি তার উত্তাল শরীরী আহ্বানে আপন করে নিয়েছিল লক্ষ্মীকে। দুই নারী যেন শরীরে শরীরে মিলে গিয়েছিল। ঠিক যেমন দুটো নদী এসে মেশে মোহনায়। একজনের উচ্ছাস ঢেকে দেয় অন্য জনের স্নিগ্ধতাকে। জঙ্গলে পলাশের লাল, লক্ষ্মীর সিঁথির সিঁদুর আর পরনের লাল কাঁচুলি বেয়ে ঝরে পড়ে ছড়িয়ে গেছিল গমনপথের মানচিত্র বরাবর। চিল্লা, জিতান, সুপুদি, ঋতুগোড়া, খায়েরবানী এই জায়গাগুলো লক্ষ্মী কখনো পায়ে হেঁটে পেরিয়েছে। তেষ্টা পেলে ডিহি বা ঝর্ণা থেকে জল আঁজলা করে তুলে খেয়েছে। খিদে পেলে বুনো ডুমুর বা ছোলার গাছ শুধু তুলে নিয়ে মুখে পুড়ে দিয়েছে। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে খড় বোঝাই ট্রাক্টরের পেছনে উঠে পড়েছে। ট্রাক্টরের চালক সেই চেনা ক্ষুধার্ত দৃষ্টিতে গিলে খেয়েছে ওকে। যখন নিজের ইচ্ছে হয়েছে সঙ্গমে আপত্তি করেনি লক্ষ্মী। অচেনা পুরুষ শরীরের সাথে মিলনের সময় শুধু ওর চোখের সামনে যোশীলালের চেহারাটা ভেসে উঠেছে। গাট্টাগোট্টা সুঠাম একটা মরোদ শরীর। ঘেন্নায় বিদ্রুপে চোখ বুজে ফেলেছে লক্ষ্মী। বিড়বিড় করে যোশীর পৌরুষহীন যৌবনকে গালি দিয়ে গেছে শুধু! আর এদিকে রতিক্রিয়ার সময় এক রমণ তাড়িত কৃষ্ণাঙ্গীর সুমিষ্ঠ গন্ধের বিষমাখা যোনিপথের কুহেলিকায় পড়ে, চূড়ান্ত উন্মাদনা থেকে নিদারুন জ্বালা যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে ঠান্ডা হয়ে গেছে, নীলচে হয়ে যাওয়া একটা জ্বলজ্যান্ত পুরুষ শরীর। নষ্ট একটা ক্রূর মহোল্লাসে সেই দৃশ্য উপভোগ করেছে লক্ষ্মী।

বেশ কয়েকটাদিন সুতান আর তার আশেপাশের কয়েকটা গ্রামে কাটিয়ে দিল লক্ষ্মী। এতদিনে নিশ্চই যোশীলালের বাড়ির লোক ওকে খুঁজছে। কয়েকদিন ধরেই ওর ঘরের আশেপাশে দুটো স্থানীয় লোককে ঘুর ঘুর করতে দেখছে লক্ষ্মী। ও বুঝে গেছে এবার এখান থেকে সরে পড়তে হবে। দিন চার পাঁচ ধরে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রচার করছে এই বারো মাইলের ফরেস্টে নাকি বাঘ দেখা গেছে! বাঘটাও নাকি ওর মতোই ভিনদেশী, পায়ে হেঁটে পাড়ি দিয়েছে কয়েকশো মাইল, বিস্তীৰ্ণ বনভূমির ভৌগোলিক সীমাকে অস্বীকার করে। যোশীলাল এর পোষা গুন্ডা কিংবা পুলিশের জালে ধরা দেবে না লক্ষ্মী, কিছুতেই না। যে লোক নিজের ঘরের মান ইজ্জত বেঁচতে চায়…

সেই রাতে জঙ্গলের পথে ঘেঁটুফুলের বনে একটা হাত সাতেকের জাতি সাপকে মরে উল্টে পড়ে থাকতে দেখলো লক্ষ্মী। এই প্রথম কুন্ডলী পাকানো ফুলে ওঠা দেহটাকে দেখে গা গুলিয়ে বমি পেল ওর। অদূরে তখন এক জোড়া জ্বলন্ত চোখ! গরম ফোঁস ফোঁস নিশ্বাস এসে পড়ছে লক্ষ্মীর গায়ে। লক্ষ্মী আর বাঘিনী এখন মুখোমুখি! দুজনেই প্রচন্ড ক্ষুধার্ত! কিন্তু দুজনকেই পালাতে হবে, বড় বড় খাঁচাওয়ালা গাড়িগুলো পেছন পেছন ধাওয়া করে আসছে ক্ষরহীন ভীষণ এক জান্তব উদ্দীপনায়। জেগে থাকা রাতটা ক্রমশঃ ঢাকা পড়ে যায় মশালের আলো আর হুলা পার্টির চিৎকারে। একই জঙ্গলের দুই প্রাক্তন প্রেমিকার মত বাঘিনী ও লক্ষ্মী চুপচাপ সরে যায়, আকাশের বুক থেকে খসে পড়া হলদে তারাকে বুকে করে। দুজনেরই এখনো ধরা পড়া বাকি।

 

 

ছবি – লেখক

ভালো লাগলে শেয়ার করুন
Avatar photo

By শাশ্বত বোস

জন্ম ১৯৮৯ সালের জানুয়ারী মাসে পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার শ্রীরামপুর শহরে । হুগলী জেলারই রিষড়া শহরে শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রম বিদ্যালয় থেকে যথাক্রমে ২০০৫ ও ২০০৭ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন । ছোটবেলা থেকেই তিনি লেখালেখির সাথে যুক্ত। বিভিন্ন নামী পত্রিকা যেমন সন্দেশ, জোয়ার, কোরক, পথ ও পাঁচালি ইত্যাদি পরিবারের তিনি নিয়মিত সদস্য ছিলেন ।

Leave a Reply