বায়োস্কোপ

পোড়া সুরকির দেহে লেগে থাকা বিষণ্ণতাকে মনে হয়,কে যেন পারদর্শিতার সঙ্গে মেঘের শরীরে আঁকছে একটি শুঁয়োপোকা।মৃত্যু তো এরকমই।মাটির প্রথম গন্ধ শুঁকে নিয়ে বিলীন হয় স্বার্থপর সমুদ্রে।

স্বপ্নের ভিতর বইছে শঙ্খচূড়ের পালক। একটি ঘুড়ি উড়ছে দিগন্তে।চিরমুক্তি। কোনও ক্লেশ নেই তার চোখে।শুধুই হাসি। মুক্তির শ্বাস। একটি গোয়ালা আলপথে হাঁটছে দুধের ড্রাম নিয়ে। জীবন তো এরকমই।ছন্দময়।দূর থেকে ভেসে আসে তারার কান্না।সন্ধ্যা নেমেছে।বইছে আজান। সন্ধ্যারতি।এই প্রথম নিজেকে এত কাছে পেলাম। জানলাম। এ কি সত্যিই আমি? গোপনে কে যেন আমার বুকে ঘষছে প্লাস্টার অফ প্যারিস। চাইনা তাকে আটকাতে। দূর বহমান চূর্ণী।সন্তর্পনে। তার কোনো অভিমান নেই। ভয় নেই হারানোর। কিছু বলতে চাইছে ও। আমি কি শুনতে পারছি ওর গান? জানিনা। জড়িয়ে ধরছে এ প্রকৃতি আমায়। এ ধূসর কবিতা কাকে নিয়ে? কী দেখতে চাইছি আমি?

শুকনো কাঠ কাঁধে বধূ। জ্বালাবে ক্ষুধা। আমার পায়ের কাছে রক্তাক্ত একটি প্রজাপতি পড়ে।তার নিথর দেহ বলছে,এ সৃষ্টি শুষে নেয় সৌন্দর্য। বেঈমান সময় ও যাপন। নিজেকে পিঁপড়ে ভেবে পথ খুঁজি। কোথাও নিরাপদ নই। গন্তব্য অজানা। শুধুই জানি, আমায় আবিষ্কার করতে হবে একটা বছর।
এ কোন ভাবনা আমায় গ্রাস করছে? যেন সদ্যজাত ব্যাঙাচি আমি। ব্রহ্মাণ্ডে সাঁতার কাটছি আর গুনগুন করছি শ্যামল মিত্র। হয়তো বা মায়াবী লুডোর বিষাক্ত সাপ আমায় টেনে হিঁচড়ে ফেলছে কবিতার ভূখণ্ডে। ওল্টানো আরশোলার মতো ছটফট করছি। তীব্র যন্ত্রণা আঁকছি টাইপরাইটারে। কৃত্রিমতা? জানিনা। কেন পাগলের মতো প্রশ্ন করছ? আমায় বিরক্ত কোরো না। ঘুমোবো আমি।

এ ব্রহ্মাণ্ডকে এখনও চিনতে বাকি অনেক…

আমি কি আর এগোতে পারব না? আমার ভাবনা থেকে অবিশ্রান্ত পুঁজ ঝরছে। ক্লান্ত হয়ে পড়ছি। তবুও দৌড়াচ্ছি। জানতেই হবে। বিশাল লাশস্তূপ আমার পথ আটকে বসে। এবার কী করব আমি? মৃত জোনাকি আমায় দেখে হাসছে। বিদ্রূপ করছে রক্তমাখা শিঙি।

এ যাপন যেন মৃত জবা। জ্বরাগ্রস্থ বায়োস্কোপ।

ছবি: দেবজ্যোতি সিংহরায়

ভালো লাগলে শেয়ার করুন
One thought on “বায়োস্কোপ”

Leave a Reply