মেসবাড়ি
১
তোমাদের সম্ভাষণ নির্মম আখ্যানে রচিত।
পদে পদে ধুলো ভর্তি মেঝে, বিপর্যস্ত বিছানা,
আধ শ্যাওলা জলের ড্রাম,
মশা ভর্তি ঘর, ইত্যাদি ইত্যাদি।
তবে, সম্মুখের
বৃষ্টিভেজা পেঁপে, জবা, গোলাপ ফুলের
পরিচ্ছন্ন প্রচ্ছদআহ্বান
অবিচ্ছিন্ন নিদ্রাবিষ্ট ভূমিকায় সমর্পিত
২
বিদায়ের কত রূপ, কত ছল, কত যাতনা!
কখনো হাত নাড়া, কখনো মাথা নাড়া,
কখনো কোলাকুলি, ইশারার নত হাসিমুখ
কখনো-বা ভোরেরবেলায়
মৌন আলোকময় বিদায়
দেখি, তোমাদের ভোরের ঘুম
শান্ত নদীর মতন বয়ে চলে।
যেন গত রাত্রির বিবাদ ভুলে
সকলে সকলের সঙ্গে
স্নিগ্ধ ক্ষমার মন্দির গড়ে তুলছো।
৩
এর, ওর, তার বিছানায়
যাযাবরের মতো গড়াগড়ি।
ছোট খাটে দু’জন হলে
রাতে মশারির গায়ে মশা লাগে খুব।
বিরক্ত হই
প্রতিবার সকালে উঠে কথা শোনাই,
‘একটু বড় খাট কেনা যায় না?’
তোমরা চুপ থাকো।
কখনো কখনো
আতিথেয়তা রক্ষা না করতে পারার আর্তি
অলস দৈবাৎ হাসিমুখে প্রকাশ করো
তোমাদের অনুচ্চারিত হাসিমুখ
সারারাত মশারির আরেক ধারে
প্রতিশ্রুতিহীন সম্পর্ক অক্ষত রেখেছে।
৪
শনিবার করে গিটারের ক্লাসে যাস।
ফিরে এসে জানাস,
‘আজ অনেক সুন্দরীর সাথে সাক্ষাৎ হলো’।
‘কথা বলেছিস?’
‘না’।
‘কথা বল। ফোন নম্বর নে। ভালোলাগা
ভালোবাসা হলে প্রেম কর।’
ফুৎকারে এ’সব কথা উড়িয়ে দিয়ে
তুই চলে যাস খেতে।
ফিরে এসে বিছানায়
আবার গিটার হাতে; প্র্যাকটিস
দেখি, তোর অসতর্ক আঙ্গুল
তখনো আমার ঐ কথাগুলো ভেবে
আগ্রহী হৃদয় কাঁপাচ্ছে
ছবি – লেখক