১
বহুদিন থেকে চাওয়া,
বহুকাল পরে পাওয়া।
বহু দূরত্ব মেনে
আমাদের থেকে যাওয়া।
ক্লান্তি দূর করে চলে যাই উত্তরে।
বহুক্ষণ অপেক্ষা শেষে
সে ধরা দেয়,
কাছে টেনে নেই, মিশে যাই।
অল্প সময়ে, বহু কথার পর ফিরে যাওয়ার ব্যস্ততা তৈরি হয়।
ফিরে যেতে থাকি,
পেছনে দেখি না। ফিরে তাকাই না।
পূর্বের তীক্ষ্ণ আলো মুখে এসে পড়ে,
আমি পাশ ফিরে শুয়ে পড়ি।
বহু পরিচিত এক ক্ষীণ জলরেখা টের পাই।
এখন
বহু দূরত্ব
আমাদের প্রস্থানের পথ দেখায়।
২
শব্দ
ব্রহ্ম।
তোমার কথাগুলো এখন
এক একটা কাঁটার মতো শরীরে বিঁধে যায়।
জেনেও চাবুকের মতো চলতে থাকে তোমার ট্যাক্সবিহীন মুখ।
একটা গোটা দিন কাজ করবার শক্তি হারাই।
এখন আর রাগ করি না – অভিমান করে দুটো কথাও বলি না।
তোমার নোংরা কথায় কষ্ট পেলেও শান্ত থেকে যাই – একটা গোটা দিন নষ্ট হওয়ার ভয় পাই।
জানালা দিয়ে তাকাই
আকাশে মেঘের খেলা।
তোমার মুখটা ভেবে একটু শান্তি পাই।
৩
মানুষ,
তুমি জেনে বুঝে ধাক্কা দিতে এতটা তৎপর!
কোথায় জেনে বুঝে সামলে নিতে তো দেখিনি কখনো?
তুমি জেনে বুঝে প্রতিপদে দাড়িপাল্লায় বসাও,
আমার থেকে কখনো তুমি এমন ইশারা পাও?
মানুষ,
তুমি কৃতকর্মে সফল হয়ে মুখ টিপে হেসে যাও,
এবার তুমি দোয়া করো, ফিরতি পথে কখনো যেনো এমন চিরন্তন সত্য না পাও।
৪
আমাদের বেড়ে ওঠায় যে ভ্রান্তি আঘাত করেছে ,
তা মানিয়ে চলতে চলতে আজ যত্রতত্র তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ মনে পড়লো
এইতো, গতকালকেই দেখা হল তোমার সাথে ।
তপ্তরোদে, বিনা ক্লান্তিতে, সবুজ মনে হেঁটে গেছি কত রাস্তা দুহাত এক করে ।
ঘুরেছি শত শত মিষ্টি মানুষের ভিড়ে,
তবুও মিলিয়ে যায়নি শিশুকন্যার উল্লসিত
উদ্ভাসিত
আলোকিত দুটো চোখ ।
কেউ ছিলনা মানা করবার, বাধা দেওয়ার
সবাই শুধু চেয়েছিল সবার তুমুল ভালোবাসা।
কেউ টাকা চায়নি, মদ কিনে খাওয়ার জন্য ।
সবাই ফুল দিয়েছে ।
আমাদের একসাথে দেখবার প্রার্থনা করেছে
৫
আরো অনেক রাত একা কাটাবো।
অন্ধকার টানেলে পড়ে থাকবো একা
এখানে বেরিয়ে যেতে বলবার কেও নেই,
দূর থেকে বাইরের আলো দেখবো,
ওখানে বড় চিৎকার,
বড় ভাষণ,
বড় বড় মানুষদের উপদ্রব।
নিঃশব্দে পড়ে থাকবো
একা।
অভ্যাস নেই আর।
উজ্জ্বলতা চোখে ধাঁধা লাগায়।
রঙিন দুনিয়া ঠিক রঙিন নয়।
ক্ষুধার্ত শেয়ালের কাছে এক টুকরো মাংসের মতো আমাকে ফেলে রেখে বিদায় নেবে আমার মা, বাবা।
ছবি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর