সত্যজিৎ রজকের কবিতা

প্রস্রবণ প্রবাহ

মাঠের পর মাঠ নিম ফল ছড়ালে তেতো তেলের গন্ধে ঘুম ভেঙ্গে যায়। এই সুঠাম দেহ উজাগর, রচনা করো আরো কিছু বিস্মিত মায়া! বিক্ষিপ্ত আঁধারের গায়ে রং ঢুকিয়ে বলবো, রতি এখনো অনেক সাজানো বাকি। মাঠ ভরা নিঃসঙ্গ ভয়। উদর থেকে পিশাচ মাথায় উঠছে। জন্ম জন্মান্তর ক্ষয়। তেতো তেলের প্রমাদ, উন্মাদ নেশা। চোরাটে স্বভাব থেকে ফিরিয়ে আনে মধু বেচতে! চক্ষুলজ্জা, বিব্রত খেতাবে দেহ মন সাজিয়েছি। রক্ষে করো হে মেয়ে, আমি বিভোর, বিরহে মাঠ পেরিয়ে রাত পেরিয়ে আর এক নিমের জঙ্গল পেয়েছি, যেখানে আমার বাবা রোজ তিক্ততায় মলিন হয়ে উঠছে আর মা প্রাচীন মুথা ঘাস।

শৃঙ্খল পরজন্ম

বাম স্তনের কোষ জরামুক্ত, দ্রোহকাল ভুল হয় না। অরণ্য বাহা শক্তিশালী হিড়িম্বার প্রস্রবনকাল, নাতিদৈর্ঘ্য অপরাজিত পুরুষের জন্ম। অবহেলা দূর থেকে বোঝা যায় না। কালক্রমে কুঁচবেণী ফুল মাথা চমকে দেয়। নির্জন খসে বন্যপ্রাণ ছুটেছে আমরণ আর আমরা জরায়ু লগ্নে অস্থির। একই বিচারে শ্রবণ কালে আমরা সবাই একসঙ্গে কেন অন্ধ হয়ে যাই?

তবে যা কিছু দেখা, যা কিছু তৃধাকাল, নরম মোহভঙ্গে অশ্রুক্ষনে চরাচর কাঁপে! পরপারে তড়িৎ পানিগ্রহণ লবণ মিশিয়ে ক্ষীণ করি। অন্তঃকরণের তলদেশে আগ্রহ বাড়ে। তৃস্না পেলে ঘুমিয়ে পড়ি। লালা থেকে ইন্দ্রদেব পতন। উষ্ণ কালচক্র। পরজন্ম অক্ষম বলে তোমাকে প্রতিক্ষণ বহু যুগ হাঁটিয়ে নিয়ে আসি।

মহাজাগতিক মায়া

ভরা সংসারে কলঙ্ক জাগরুক তোমার মোক্ষম ঋতুবাদ। চাঁদের পাহাড়ে রুদ্রাক্ষ ধ্বস, মন্ত্রবিঘ্ন ধরা, ত্রিগুণ শান্ত, দক্ষজ্ঞান। নাগরিক হত্যা! পঞ্চমবেদ এবার শরীরচর্চা শেখাবে। তবুও গুঢ় মতবাদ, সাহস জেব্রাসাম্যক চক্রবাক নয়। যে পথ দিয়ে হাঁটতে সে পথ এখন মহাজাগতিক বিস্মৃত নিয়ম। কুচক্রে ভ্রান্তি বাড়ায় আর সুচক্রে মোহনা! দুহাত শান্ত করো, জ্বালানি পুড়ে ছাই হতে দাও, উন্মাদ সাগরে অতি তীরবিদ্ধ পড়ে আছে মৎস্য অবতার।

বৃহৎ উদরে গিলে খায় বহ্নিচক্র, শুন্যভাগ জল ও স্থল। দ্বিধা নেই কোন বিজারণ, ভুলে যাবে সময়, দরজা খুলে দাও ওরা পথভ্রষ্ট যমজ — হারিছে সন্তুলন। সন্ত, সাধন, সাধ্যসম। চৈতন্য ন্যায় কর্য্যবিলাসে, খালি পায়ে হাঁটছে — ভাই সকল, সন্তানসম, হৃদয়ঙ্গম জোড়। তোমাদের এ দুঃখ দিনে আমার সারা শরীর অচল। ভিজে যাচ্ছে মাটিতে মোলায়েম উৎস, বীজ সৃজনের নিয়ম।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply