আরোগ্যমন্ত্র
আরোগ্যের নামে রাখা আছে দীর্ঘতর পথ।
দ্বিধার খই ছড়ানো। পাতাবাহারের পাশ কাটিয়ে
তুমি এসে দাঁড়ালে, রক্তকরবীর মঞ্জরী আসবে,
তবু আরোগ্য চেয়ে থাকো, যতদূর জ্বরার বিস্তার।
ক্লান্তির চারা ফুটে আছে তারই মাঝে মাঝে
ব্যথার স্পন্দন ভেঙে সে গাছে ফুল আসে, যেন
কম্পমান ফড়িংয়ের ডানায় তিরতির প্রাণের সঙ্গতে,
তবু আরোগ্য এসো ধীর পায়ে, ছুঁয়ে দেখো পার্থিব যেটুকু
আশ্রয়ে নিরাময় থাকে। ঈষদুষ্ণ জলে এক গোছা
তুলো ডুবিয়ে পরশের আগে তাকিয়ে থাকার মত।
সময় যতটা ভারী, ততোধিক ধারণ করেছি অশ্রুভার।
তবু আরোগ্য এসো, ধৈর্য্য দাও। হাত পেতে আছি।
ঘুমের গহন ঢেউ শান্ত করেছে বিছানাবালিশআসবাব
শান্ত করেছে শ্রম, নিত্যপুজো, হোমের আগুন, চিতাভস্ম
প্রতিটি সমর্পণের গায়ে লিখে রাখি ক্ষমা,প্রবাদের ভাষায়
আরোগ্য তবু, অস্ফুটে এসো। অসুখের পালক ভিজিয়ে।
সাংসারিক
সুলক্ষণা মেয়েটি দুপুরের কিছু দেরী দেখে
খাতার ওপর ঝুঁকে পড়ে –
নিয়মিত লিখে রাখে গৃহস্থ নথি। দিনান্তের ভার।
নক্ষত্রের পর নক্ষত্র জুড়ে,
সে খুঁজে নিতে চায় ছায়াপথ। স্নেহ চরাচর।
নিভৃতলোকের আলো এসে মেয়েটির আঙুলে
দহনের ঘাম মুছে দেয়।
পরমান্ন ফুটে ওঠে।
সহিষ্ণু খাতার গায়ে জমে অস্ফুট বলকের সর।
প্রস্থানপর্ব
কষ্ট হলে, যেওনা।
সত্যি সত্যি কষ্ট হলে, থেকে যেতে পার চিরতরে।
আমার মুখে আঁধারির ছায়া খেলা করে।
রেখে দিতে চায়, অশ্রুছায়ায় বিহ্বল প্রাণ।
বিশ্রাম নিতে পারো।
একটি শব্দ কোরো না, স্পর্শঘুম ভেঙে যায় পাছে।
তোমার যে ঘর ছিল, এখনো তোমারই সে আছে-
আশ্রয়। কোথায় যাবে বলো, মায়ামেদুর হাতখানি ছেড়ে!
যদি চলে যাও একা একা, আমিও থেকে যাব একাকী।
অথবা বলতে পারি, সাবধানে যেও।
বলতে পারি, ভালোবাসি।
ছবি – প্রকাশ কর্মকার