স্বাতী ব্যানার্জীর তিনটি কবিতা

প্রতীকী ছবি

মেয়েটি বেশ্যা নয়


আমার ঘরে একটা লাল আলো জ্বলে সারা রাত,
ফ্যানটা ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে একসময় ঘুমিয়ে পড়ে।
আমার পেটের ভিতর থেকে উঠে আসা লম্বা মিছিলের দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ি,ওরা আমার চোখের পাতার ওপর দিয়ে চলে যায়।
লাল আলোটা সবুজ হয়ে আসে, জানালা খুলে দেখি সকাল হয়ে গেছে।

আমি ঘুমাতে যাওয়ার আগে চোখ দুটো খুলে রাখি বুকের ওপর; ওরা সারারাত তারা দেখে লাল চোখে – যে আকাশটা সাদা চোখে আমি দেখিনি গত পরশুও।

আমার চুলের ভিতর ওঠা নামা করে অস্থিরতা,আঙ্গুলের ফাঁকে নষ্ট আবেগ; আমি অচেনা হয়ে যাই আবার ও নিজেকে চেনার ঠিক এক পা আগেই ওরা ছুঁতে এলেই।

নির্বাসনের পরে

সুখ পুড়িয়ে দুঃখ কিনি!
ছাতিম এবং মেহগনি
বারুদ জমাই পায়রা খোপে
ভগ্ন চাঁদে কান্না মেপে।

বাসি ক্ষত চুন হলুদে
অযত্ন নিই চড়া রোদে
আবেগ বড়ি উঠোন জুড়ে
সংযমতার লড়াই লড়ে।

নষ্ট ছায়ার নীরব বাঁধে
সাবেক স্মৃতি পিন্ড রাঁধে,
দেয়াল জুড়ে খড়ের চালায়
দুঃখ তখন সুখকে জ্বালায়।

জলের পোকা

নিকষ কালো নৌকার কঠিন পাটাতন ভাসে যাযাবরী স্রোতে, কেশবতী নারী ঘোলা জলেতে মুখ দ্যাখে সাঁঝের আবহতে।

দিন ফুরোনো আলো উনুন জ্বালিয়ে রাখে, ওড়া রাস্তার ধুলো বুকপকেটে জমে।
রুপোল শরীর, জালে ভাতের গন্ধ মাখা!
আঁশটে বলে কারা, পাড় চেনে না যারা।

উতল নদীর শাখা ঝড় জমিয়ে রাখে, সমুদ্দরের তুফান বুকের আঁচল টেনে ভিজিয়ে মাতাল করে জলের সীমারেখা।

একটা পুরুষ,নারী অনেক দূরে বাড়ি, জালের ছোট ঘরে যাযাবরের বসত গড়ে, আঁধির পরেও জাগে ওদের দ্বীপের খুঁটি।

পাটাতন ও টালি বড্ড বেশি কাছে,যতটা ঠিক দূরে বন্যা হওয়ার পরেও ওদের আদর মাখা মাটির দেয়ালনকশা বাঁচে।।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন
Avatar photo

By স্বাতী ব্যানার্জী

ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির নেশা, আজকাল মূলত কবিতা লেখেন। M.SC শেষ করে PhD এর প্রস্তুতি চলছে। থাকেন বৈদ্যবাটি, হুগলি জেলায়।

Leave a Reply