অরূপরতন হালদারের তিনটি কবিতা

সপ্তডিঙ্গা : প্রতীকী ছবি
রাত্রি অন্ধ ঈশ্বরী
স্মৃতির ভেতর সূর্য ডুবে যায় ঘোড়ারা ফিরে আসে নতুন আস্তাবলে যেন তীর নেই কোথাওসম্বিত এক অন্ধকার ধীরে গুটিয়ে নিচ্ছে তার সব ডানা ও আস্তরণ দোঁহাগুলি মিলিত হবেনা আর অনিয়ন্ত্রিত বোধি যেন, পরস্পর থেকে দূরে সরে যায় রক্তে বিচ্ছুরিত তরবারি ধীর বিষণ্ণ পাখিটির মতো ঘাসে নেমে আসে, ঘাসের দেহে জলের ঘূর্ণন তমসার প্রদেশ ভরে ওঠে করুণায় রাত্রি অন্ধ ঈশ্বরী, তার স্তব্ধতায় মকররেখাটি জ্বলে ক্লান্ত তুমি, দ্বিধায় জড়ানো শ্বাসেরা অগণিত নৈশ গোলাপআকাশ ছেয়ে ফেলে এই ভূমি তার স্নায়ুপথে দেখে ভেসে চলা মেঘেরা বধির একটি শয়ান কুরুক্ষেত্র ফেলে আসে তার বুকের ভেতর একটিমাত্র বীজ কালপুরুষের অন্ধকার ভালবাসে  চন্দ্রকেতুগড়
তেমন পাখিরা জয়ের শব্দ, ফিরে এসো ক্যানভাস মূলত যে শ্বাসকষ্ট আঁকে তার তার ওপর আলো পড়ে প্রাকৃত আকাশের হাতের গভীর ট্যাটু সরে যায়সে জানে মনস্তাপ তাকে খেয়ে ফেলবে একদিনআজ এই গ্রহে ঝরে প্রাচীন ছুরির জং বিদায়ের শব্দ শস্যে খুঁজে পায় মায়ামুকুরের ছায়া অস্পষ্ট তুফান আমাকে আবিষ্ট করেদূরে জ্বলে চন্দ্রকেতুগড়, ঈশ্বরী ঘুমিয়ে পড়েছেসামগান তাকে ঘিরে চুম্বিত হ্রেষা টেনে নেয় শরীরে একটি উদ্ভিন্ন বিড়াল মহামারি শোঁকেতুমি কি তেমন নিশি ? হন্তারক বাতাসের গমন দেখ স্তব্ধ চোখে জলের দুয়ার ভেঙে যায় পঞ্চব্যঞ্জনেপশুদের দৃষ্টিতে বিঁধে আছে অসনাক্ত দেহগুলিঢেউয়ের নুনে যে পরম্পরা সেও এক বিধিপাতাল-বালক শুয়ে আছে গৃহ-মধ্যিখানে পাঁজর শূন্য হতে হতে দেখে তার সাধ শরীর-পাতন থেকে দূরে মধ্যবর্তী তৃষা আমাদের সন্তানলালরঙা বেলুনের মতো উড়ে যায় প্রাকৃত আকাশেবজ্রযান
অনেক হিম, কুশলক্লান্ত তুমিসুবর্ণরেখায় ডুবে যাচ্ছে জরায়ুর এলোমেলো ফুলএই তৃষা সময়ান্তর ছুঁয়ে আছেপালিত পুত্র, তোমার মুখের ঘাম জানে কাছে দূরে অক্ষৌহিণী প্রেতযোনিনিধিরাম শুয়ে আছে ঝরা শিউলির উপর তার শুধু বল্কল আছে মাংসখণ্ডগুলি সান্ধ্য নগরীতে আগুন-প্রত্যাশী কাঁটার মুখে দাহের অবিরাম ধ্বনি অন্ত্রের ভেতর পরবাস দ্রুতগামী কেবল বজ্রযান স্তব্ধপ্রতিটা মুখোশ ছিঁড়ে পড়ছে বিদায়ী আলোর ভেতর
ভালো লাগলে শেয়ার করুন
Avatar photo

By অরূপরতন হালদার

পেশায় ডাক্তার। তাঁর মননে ও বোধে কবিতার আলোছায়া খেলা করে। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ সেতুর উপর সূর্য, আনন্দরাত্রি, উন্মাদরেখা, শব্দপতনের গান, শূন্য রক্ত গাথা, ভাসমান এলিজি।

Leave a Reply