অ-সুখের উপাখ্যান
১
জ্বর এলে মনে পড়ে যায় ঠিকই
অথচ হাত ধরিনি কোনওদিন
গোপন অসুখের মতো সযত্নলালিত
ওষুধ পড়েনি তাতে।
অসুখের মাস পেরিয়ে যায়
বুকে চেপে জ্বর নিয়ে নেওয়ার কথা রাখা হয় না।
হয় না কিছুই, তবুও বুক থেকে বুকে
পৌঁছে যায় উত্তাপ।
নিথর হও তুমি। বেদনাপ্রতিম।
আমার গলিত শবদেহ জানে
জ্বর এলে মনে পড়া জায়েজ।
২
ক্ষণিকের জনম ছিল
ক্ষণিকের আশ
যেভাবে দেখে ডুবন্ত মানুষ
জলে নীল হয়ে গেছে শরীর
কাঁপন আসে।
খড়কুটোহীন আমি ভেসে যাই।
অতল জলের দিকে চেয়ে
চোখ বুজে ফেলি ত্রাসে
কেউ তো বোঝেনি শমন
তুমি হাতে অধিকার মেখে
ছুঁয়ে দিলে ভয়।
মৃত্তিকার স্তর খসে গেল
তোমায় আদেশে বড়ো মানায়,
আদেশ এল, ডুবে যাও।
ডুবে গেলাম।
অপ্রেমে বিরাগসাধনে
১
চাতুরি আমার মজ্জাগত।
অনৃতভাষণ রক্তে বয়ে আমি
কলকাতায় ঘুরেছি আজন্ম
দাগ হয়ে গেছে।
আসামীর মতো নীচু মাথা
দেওয়ালে পিঠ
ধিক্কারে ফেটে যায় কলকাতার আলো।
খালি বিষণ্ণ চোখের এক যুবতী জানে
অপরাধ যা ছিল
যন্ত্রণা তার দ্বিগুণ।
২
যোগাযোগহীন পড়ে থাকে কথা
হাসির ভেতর ভেঙে যায় ব্যর্থতা
দু’খানা মুখোশ কেবল
নিজেদের মতো মঞ্চ সাজায়
অনুমতি চায় বিচ্ছেদের।
প্রতিবার ভুলের কাগজে সই করি
আর কালি লেগে যায় বুকে।
আমরা যে স্বপ্ন দেখি না আর
তাতে পৃথিবীর যায়-আসে না
তুমি খালি বুকের বাঁদিকে
উল্কার মতো দাগ নিয়ে ঘোরো।
৩
এ ভুল আসলে ভুল নয়
কবিতায় লিখে দাও একবার
গোপনে বিরহ রাখো
ভেঙে দাও জয়ের নেশা।
ছুটে এসো ঝড়ের মতো
আগুনের শ্বাসে পুড়িয়ে শুদ্ধ করো
বলে দাও,
ভালোবাসার মতো অপরাধ কিছুতে নয়।
Source: Wikipedia