অমিতাভ সেনের কবিতা

প্রতীকী ছবি

অপরাধ

এক‌ই জায়গায় ঘুরপাক
খেতে খেতে, প্রভুর প্রিয় কুকুরটা নতিস্বীকার করল,
জানি না — কোন ঘ্রাণের ঘেরাটোপে।

গত দিন তিনেক
আঁকড়ে ধরে টুকরো সাবান, আরশোলাটা বুঁদ,
জানি না — কোন জীবনের সারাৎসারে।

শুশ্রূষাপ্রার্থী ঘা আকর্ষণ কাড়ে মাছির,
আর বিলাসভেজা ওষ্ঠ চোষে
কোনো কৃষ্ণদেবদূত —

বড়ো অদৃঢ় অবস্থান এ পৃথ্বীর !

সুন্দরের সাধনা অপরাধ মানি,
জানি যখন, দরদাম করে
সবার‌ই হাতে ওঠে
বাজারের সেরা।

অনিবার্যতার চোরাসোঁতায় ভেসে,
আমরা সবাই উঠি অপরিণতির পাড়ে।

 

ক্ষমা

চৈত্রপ্রান্তে থিরবিজুরি
কোন অনিকেত ভবিষ্য দ্যাখায়,
বেয়াড়া পিকস্বরে
থিরথিরানি যখন কার্নিশময় ?

চালচিত্র বদলায় স্বাদু মেদুরতায়
ঋতু হতে ঋতু কী বিরামহীন !
সভ্য শয়তান কিছু
তবু ঘানি ঠেলে মরে,
ভিনদেশী মাছ ভেবে, তেলাপোকা গেলে।

লেজার চমকানো বিলবোর্ডের
শিরোনাম যাদের দখলে,
যাবতীয় ছিনালিপনায় মজে
ছিলিম সাজায় তারা জম্পেশ …

আর প্রায় অদৃশ্য নগরসংকট
আমাদের ঠেলে দেয় অচেনা দরোজায় —
কড়া নেড়ে, মার খাই বেধড়ক …
ক্ষমা তবু চাই নি,
শিখিনি তো ক্ষমা চাইতে।

 

ফকির

যেজন ফেরে ঘরে ঘরে
ফকির সেজন হয়,
ফিকির খোঁজে মন্দজনে
সেজন ফকির নয়।

অল্প, অতি অল্প আঁচে
একফালি চাঁদ পোড়ে,
জোছনা রুগ্ ণা অতি
যেমন-তেমন বাঁচে …

রক্তচাঁদ ধিকিধিকি জ্বলে
কাপাসমেঘে … মেঘে —
ছলচ্ছল ফকির-নয়নে
ক্লেদজ সংসার ভাসে …

ধোঁয়াভেজা ভোরে
ছাই জমে অযাচিত,
আর ফকির অদৃশ্য হয়
রূঢ় রোদ্দুরে …

আলোয় ঢাকত আন্ধার,
হয়তো হতো স‌ওয়ালজবাব কোনো কস্মিন্ কালে …

 

ছবি – যোগেন চৌধুরী

ভালো লাগলে শেয়ার করুন
Avatar photo

By অমিতাভ সেন

জন্ম : ১৯৬৮ প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : 'চতুর্দশপদী অন্তরিন', 'চতুর্দশপদী ক্রমবর্ধমান', 'আজানে - আহ্নিকে', 'ঝরে জল'।

Leave a Reply