সুজল সাহার পাঁচটি কবিতা

প্রতীকী ছবি

আগুনের জন্মকথা

নষ্ট ভ্রষ্ট ঈশ্বরের হাত
তোমাকে মদত করেনি।

আচ্ছন্ন জাতীয় সড়ক
বরাবর নিঃশব্দ হেঁটে গেছি।

উদাসীন ঘোড়ালিয়া থেকে
দিব্যি তোমার জগদানন্দপুর।

ছোট বড় ঢেউ জলকে নাচায়
খলের চোখরাঙানি ভুলে লিখি
মোহময় এই আগুনের জন্মকথা।

 

রমণীয় তারাফুল

স্রোতের উজানে
ওই বৈঠাখানি
সানমুন লেকে ভাসি দিনরাত।

মগ্ন বাতিদান হাতে
শালপাতার ঠোঙায়
তোমার প্রাণের মাখাসন্দেশ।

একা ডোডোপাখি
তপ্ত ওঠানামাগুলি
নির্জন কোটরে সাজিয়ে রাখি।

কোজাগরী পূর্ণিমায়
আত্মপরিচয়হীন
চোখে দেখি রমণীয় তারাফুল।

 

লাস্যময়ী চাঁদ

সুগন্ধ্যার পথে নির্ভেজাল গন্ধরাজ
উন্মাদ চাঁদের পরিক্রমা

রাজাদের নির্জন আড্ডার
মাঠে দেখি ভোরের আকাশ।

বিরামহীন মাকুর তাঁত
লাস্যময়ী তোমাকে অশেষ মনে হয়।

 

প্রিয় হরিমতি

কুষ্টিয়ার মাটি
উজান গাঙের তোমাকে ভাসায়।

ফিকিরচাঁদ
কাঙাল হরিনাথের নক্ষত্রগড় জাগে।

নিরিবিলি আখড়ায় মগ্ন
তোমাকেই খুঁজি, প্রিয় হরিমতি।

 

গান্ধীগ্রামের আকাশ

উপেক্ষার ক্ষত
বেদনার ভার
অযাচিত স্পর্ধা ভুলে
বিনয়ের রঙে প্রিয়মন আঁকি।

চোখে চোখে জলের বিদ্যুৎ
খেলে যায়।
প্রতিহিংসার আগুন নিভলে
চরাচরে জাগে ওম্ শান্তি ওম্।

নীল বাগিচায় ঝরা
অচিন্ত্য শিউলি
হাজারদুয়ারির জল্পনা কল্পনা;
গান্ধীগ্রামের আকাশে পেখম ছড়ায় তোমার ময়ূর।

 

ছবি – যামিনী রায়

ভালো লাগলে শেয়ার করুন
Avatar photo

By সুজল সাহা

১৯৯৫ থেকে লেখালেখি শুরু। ইংরাজী সাহিত্য পড়ার সুযোগ পেলেও নানান প্রতিবন্ধকতায় মাঝপথে ছেদ। তবুও সাহিত্যচর্চা ব্যতীত অন্য কিছু ভাবা হয়ে ওঠেনি। পেশায় গৃহশিক্ষক। কবিতাই ধ্যানজ্ঞান বলা যায়। রবি ঠাকুরের গান ছাড়া স্বাভাবিক জীবন যাপন অসম্ভব ছিল। পছন্দের বইপড়া আর গানশোনা ছাড়াও 'তমসা' নামের কবিতার ম্যাগাজিন অনিয়মিত হলেও প্রকাশ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ব্যর্থ জীবনের একমাত্র সার্থকতা নিরন্তর অক্ষরসাধনা। ভ্রমণের শখ থাকলেও সময় অভাবে পছন্দের জায়গায় যাবার সুযোগ খুব কম মিলেছে।

Leave a Reply