অশ্রুবিহ্বল আলোরেখা

শান্ত জলের গায়ে
বাঁশবনের ছায়া পড়িয়াছে
তাহার ফাঁকে আকাশের বুক দেখা যায়
যেন আদিবাসী রমণীর স্মিত হাসির মতো নরম মনে হয়
মনে হয়
খারাঙের ভিতর দিয়া
রহস্যময়ী সজনাফুল মাথা তুলিয়া
অশ্রুবিহ্বল আলো দেখিবার ধৃষ্টতা করিতেছে..

 

গাছেরা ক্রমে বিধবা হইয়াছে
শাঁখা নোয়া ফেলিয়া দিয়া
দুখিয়া নারীর মতো দাঁড়াইয়া আছে
সমস্ত পাহাড়ে

 

তাহার ভিতর বহুদূরে
একটা গাছের মাথায়
রক্তলাল পলাশ ফুটিয়াছে

সে কী সদ্য ঋতুমতী হইয়াছে

উপবন জুড়ে কাকলির মতন
চুপিসারে আড় হাসি দেখা যাইতেছে

 

জানালার ফাঁক দিয়া
বটের ঝুরি নামিয়াছে মাটিতে
ছায়া আসিয়া পড়িয়াছে
মেয়েটির গায়ে

তাহার দ্বিধার বয়ন ছাপিয়া
বটের নীচ দিয়া
যেন একটা নদী দাউদাউ বহিয়া যায়

 

প্রজাপতির পাখায়
যে সময় খুলিয়াছে
মেয়েটির নাভিপদ্ম তাহাতে
উন্মন হইয়াছে

কে যেন আসিয়া ধরিতে চাহিবে
তাহার আরক্তনয়নের অসুখ

 

কার কাছে মায়া রাখিবে
হে দীঘল ছায়াপারাবার

যে উচাটন বারবার
ফিরিয়া লইয়া যায় বিস্মৃতির অতলে
তাহাকে কী উপেক্ষা করিব!

 

ছবি – যামিনী রায়

ভালো লাগলে শেয়ার করুন
Avatar photo

By সম্রাট  পাল

জন্ম ত্রিপুরার খোয়াই নদীর তীরে সবুজঘেরা ছোট্ট গ্রাম চেবরীতে, ১৯৯৪ সালের ২৫শে জুলাই। পেশায় ত্রিপুরা সরকারের পূর্তবিভাগে কর্মরত প্রকৌশলী আর নেশা সুর ও কবিতার অমোঘ মায়ায় বিলীন হয়ে থাকা।

Leave a Reply