ফুঁ
হাওয়ার উপর নির্ভর করে আছি পুরোটাই। কী আদম, কী মাহদী, সবাই-ই যেন হাওয়ার অঞ্চল।
মূলত একবার একটি মাটির পুতলার বাম পাজরের মাটি নিয়ে খোদা ওখানেই ফুৎকার করে বসিয়ে দিলেন আরেকটি সিনা—
সেই থেকেই আমরা মূলত সঞ্চালন করি ‘ফুঁ থেকে হাওয়াকে।’
মূলত ‘হাওয়া’ একটি নারী চরিত্রের নাম।
কুলছুম আক্তার
দোকানের একটি রেডিওতে
রবীন্দ্র সংগীত চলছে—
বেশ মাধুর্য খুঁজে পেলাম
শিল্পীর গায়েকীতে
একদম মায়ের হাতে বানানো
পায়েসের মতোন
দোকানের ভিতরে গিয়ে
রেডিওর পাশে বসলাম—
দোকানটা ছিল মন
আর রেডিও! ওটা প্রণয়েরই রূপক
আর শিল্পীর মুখের দিকে তাকাতেই
গেয়ে উঠলো— “আমারও পরাণ যাহা
চায়, তুমি তাই, তুমি তাই-ই গো”
শিল্পীটি আমার প্রেমিকা, কুলছুম আক্তার।
যে ফুল বুকে ফোঁটে
নিজেকে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি
কচুরিপানায় ফুটতে দেখে ফুল
আমি কিভাবে অবাক হলাম
আবার
শৈশবে সেই ফুল স্পর্শ করার জন্য
কিভাবে সাঁতরে পার হতাম ডাঙা;
একবার তো ফুল ছিঁড়ে এনে দিয়ে ছিলাম
পাশের বাড়ির শিউলিকে
শিউলি এখন বড়ো হয়েছে
বেশ ভালো গান করে
একবার আমাকে দেখো বললো—
কী গো শৈশবের প্রেমিক
আর বুঝি কচুরিপানা ফুল এনে দেবে না?
এই বলে হো হো করে হেসে দিলো;
আমি তাকে বলে ছিলাম
এ যুবক বয়সে নদী পার হয়ে
ফুল স্পর্শ করতে চাই
যে ফুল তোমার বুকে ধরে আছো, শিউলি!
বেড়ে উঠছে হৃদয়
অধীর আগ্রহ নিয়ে বেড়ে উঠছে আমার হৃদয়। মাঝে মধ্যে তো বলেই ফেলি, হৃদয়টা যেন তালগাছ হয়। শৈশবে অনেক দেখেছি, তালগাছে বাবুইপাখি ঘর বাঁধে। অসম্ভব সুন্দর ঘর। হাওয়ায় মাটিতে, ঝোঁপের ওপর বাবুইপাখির ঘর ভেঙে পড়লে—
আমি হাতে নিয়ে সে কী কান্না করতাম! এরপর থেকে পাখি থাকবে কোথায়, এই ভেবে কান্না করতে করতে দুই চোখ হাত দিয়ে ডলে লাল করে দিতাম!
একবার হৃদয়টা তালগাছ হলো৷ তাতে বাবুইপাখির বাসার মতোন ঘর বাঁধলো প্রেম। একদিন আচমকা বিচ্ছেদের হাওয়ায় ভেঙে গেলো সম্পর্ক—
এখন প্রাক্তনের শোকে রোজ কেঁদে যাই, কেঁদে কেঁদে যেন অন্ধ হয়ে যাই ‘ইউসুফ কে না পেয়ে আহাজারি করতে করতে যেমন করে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলো জুলেখার দুই চোখ!’
আমি ও সে
দাঁড়িয়ে থাকা এক বকের মিনার
ইশারা বাড়িয়ে রেখেছে যে জলের পাটি
সেখানে তা থৈ থৈ খেলা করছে—
এক মাছের ছায়ার রিদম…
বকটি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে
যেন ভিতর থেকে আহ্বান আসে
এক শিকারী মোজেজার!
তারও ভিতরে চলে গেছে
খেলতে থাকা সেই মাছের
এবার সে নাচতেছে…
নাচতেছে, জলের আরো ভিতর ঢু মারা
বকের ঠোঁটের মাঝ খানে পড়ে!