নিটোল গ্রীষ্মের দুপুর। তপ্ত বাতাস যেন চারিপাশ থেকে গ্রাস করে ফেলেছে এই ক্ষয়িষ্ণু সভ্যতা কে। তার মধ্যেই রাধাচূড়া ফুলগুলো সূর্যের আলো রাজবেশের মতো গায়ে জড়িয়ে ফেলে অনায়াশেই। ঠিক এই সময়ই কি ফেরেস্তারা নেমে আসে রোজ পৃথিবীর বুকে…ঝুঁকে পড়ে ঘ্রাণ নেয় এই নিঝুম বেপাড়ায় এসে?
আচ্ছা… চোখের পাতা আলতো করে পেতে দিলে ঘুম নেমে আসে… আর চোখ খুলে ফেললেই তো জেগে থাকা… এই আধো আলো-ছায়ার মাঝে আলগা হাতে ভেজিয়ে রাখা দরজার মতোই ভেসে থাকে চোখ। হাল্কা গোলাপি রঙের পর্দা আগুন রাঙা দ্বিপ্রহর রোদ কে আরাম কেদারায় বসিয়ে রাখে, নিজের খুশি মতন। আর সিলিং ফ্যানটার মার্জিত বাতাসের জোরে কখনো বা সেই পর্দার ফাঁক দিয়ে দেখা যায় সেই রাধারানীর সাজ।
ঘরের মেঝেটায় ঝরা পাতার মতোই শুয়ে আছে মেয়েটি। সে কি জেগে? না ঘুমিয়ে? তার চোখের পাতা কি মৃদু নড়ছে? তা হলে না হয় বলা যেত সে স্বপ্ন দেখছে…কিন্তু তার আদুরে চার পেয়ে বন্ধুটি এত কিছু বোঝে না। বিকেল হতে না হতেই সে নিয়ম মাফিক কয়েকটা বিস্কুট আর অনেকটা আদর পাওয়ার লোভে পৌঁছে যায়। অপেক্ষা করতে করতে সে খানিক ক্লান্ত হয়েই গাছের ছায়ায় বসে… কখন যে সে ঘুমিয়ে পড়ে…নিজেই টের পায়না।
তবুও রোজের অভ্যাস…ঘুম ভেঙে সে দেখে সব পাখিরা দিনশেষের ফিকে হয়ে আসা আলোর সিলুয়েটে হারিয়ে যাচ্ছে…আর প্ল্যেলেট ভরা নীল আলোয় মাখামাখি হয়ে পড়ে থাকে একটি ফুল… রাধাচূড়া।
ছবি: অমৃতা শেরগিল