রবিবারের আলাপ সালাপ : পর্ব – ০৩ (নববর্ষ ১৪৩১)

বাংলা নববর্ষ শুরু হল। জীবন ফুরিয়ে যায়। সঞ্চয় শূণ্য । ইঁদুর দৌড়ে ক্লান্ত, আবার এই ক্লান্তি জীবন মনে হয়। বসন্ত শেষ গ্রীষ্ম শুরু। বৈশাখে রবীন্দ্রনাথ জৈষ্ঠ্যে নজরুল। ছোটো বেলায় এই সময় রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যা হতো। এখন তেমন দেখা যায় না।
বাংলা কাব্য রচনায়, বাংলা সাহিত্য এগিয়ে আছে এটা বলা বাহুল্য । চৈত্র মাসের শেষদিন বাংলা আকাদেমি চত্বরে সারারাত জুড়ে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো । এখন হয় কিনা জানি না। এখন তো অবক্ষয় রীতিমতো গবেষণার বিষয় হয়ে উঠেছে। বাংলা তারিখ, বাংলা মাস আমরা খেয়াল রাখি না। কোনো কিছু নিয়ে কপট রাজনীতি ভালো বুঝি।

পুরোনো বছর ভুলে নতুনকে স্বাগত জানানো এবং নিজেদের আরও সুন্দর করে তোলাই একমাত্র ব্রত। পাড়ায় পাড়ায় হালখাতার আয়োজন, মিষ্টিমুখ, নতুন ক্যালেন্ডার, পঞ্জিকা, নতুন খাতায় স্বস্তিক চিহ্ন। কদম আর আমপাতায় সেজে ওঠে প্রতিষ্ঠান। গ্রামের দিকে মাটির বাড়ি নতুন করে সেজে ওঠে।

আমাদের তো সেই মানসিক স্থিরতা নেই, সারাক্ষণ অস্থির। কেন যাচ্ছি? কোথায় যাচ্ছি? জানি না। আত্মমর্যাদা টুকু টিকিয়ে রাখার অক্লান্ত পরিশ্রম, ক্ষয়ে যাওয়া। ভালোবাসার মূল্য টুকু একে ওপরে বুঝে নিচ্ছি। কেউ কাউকে বুঝতে দিচ্ছে না, জীবনের পাপ অন্ধকার দিকটা। সবাই বৈকুন্ঠের দাঁড়িপাল্লায় মেপে নিচ্ছে…
গতানুগতিক জীবনের বাইরে থাকা সকল মানুষকে আমার আসমুদ্র প্রণাম। যারা প্রতি মূহুর্তে সমাজের জন্য মানুষের জন্য নিরবে কাজ করে যাচ্ছে, তাদের নববর্ষের শুভেচ্ছা। এই নববর্ষ উৎসব তো শুধু বাঙালির। বাংলা ভাষা আর বাঙালির জন্য যারা চিন্তা করেন, যাদের সুপরামর্শ ছাড়া এই পৃথিবী আজ অচল, তাদের প্রত্যেকের কাছে আমরা ঋদ্ধ হই। তাঁরাই তো আমাদের অভিভাবক, পথপ্রদর্শক।

এই নববর্ষে একজনকে স্মরণ করবো, তিনি প্রীতিকনা জানা। পিছিয়েপড়া সমাজের ছোটো-ছোটো ছেলেমেয়েদের নিয়ে তাঁর যে কাজ আমাদের আবেগ প্রাণিত করে। এই সৎ সাহসিনীদের বল্মীক ওয়েব কুর্নিশ জানায়। আরও আরও অনেক মানুষ এগিয়ে আসুক মানুষের কাজে প্রকৃতির কাজে। ভালোবাসায় আবদ্ধ হোক এই প্রার্থনা জানাই নতুন বছরে। আমরা আরও সহানুভূতিশীল, ঠিক মানুষের ঠিক মূল্য যেন দিই। বাড়ির ঝাঁটাকে অবহেলা, রাস্তার কুকুরকে আঘাত, দূর্বল মানুষকে যেন ব্যাবহার না করি।

শুভ নববর্ষ । অন্নপূর্ণা আমাদের সমৃদ্ধ করুক। সকলে ভালো থাকুন।  আনন্দে থাকুন।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply